স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ। ইন্টারনেট ছাড়াও যেনো নাগরিকেরা স্মার্ট নাগরিক সুবিধা পেতে পারেন সে জন্য কৌশলী ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। তুলে ধরেছে স্মার্ট বাংলাদেশ: প্রেক্ষিত ও ও বাস্তবতা। স্মার্ট সমাজ গড়ে তুলতে সংগঠনের ভূমিকা তুলে ধরতে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয় সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের নতুন কমিটি। শুরুতেই নতুন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় ব্যানারে। এরপর বক্তব্য পর্বে দেশের স্মার্ট যাত্রায় পেশাদারদের সিটিওদের উপেক্ষিত হওয়ার সুর ছিলো নতুন কমিটির সদস্যদের কণ্ঠে। তবে এতে দমে না গিয়ে নতুন করে অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নে সমস্যার সমাধানে সম্মিলিত প্রয়াসের সংগঠনের পক্ষ থেকে আহ্বানের কথা তুলে ধরেন সিটিও ফোরাম মহাসচিব আরফে এলাহি মানিক। এজন্য তারা স্মার্ট মানবসম্পদ গড়ে তুলতে কাজ করছে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনের নিজেদের সিটিও ফোরাম ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) ড. সেলিম; যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক, মো আসিফ, মো আসিফ, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ মুসা, কার্য নির্বাহী সদস্য সুপর্ণা রায়, নাহিদা আক্তার ও মোঃ ফজলে মুনিম বক্তব্য রাখেন। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সিটিও ফোরাম সভাপতি তপন কান্তি সরকার। বক্তব্যে তিনি ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি ও কাজে দক্ষতা উন্নয়নে সিটিও ফোরামের পেশাদার কর্মীরা কাজ করবে বলে জানান। বলেছেন, হ্যাকাথন, রাউন্ডটেবিল বৈঠক সহ নানা আয়োজনে স্মার্ট সিটিজেন তৈরির পাশাপাশি একটি ভ্রাতৃত্বময় স্মার্ট সমাজ গড়ে তুলতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যহত থাকবে। এবার আমরা গণমাধ্যমকে আমাদের সঙ্গে ওতোপ্রোতোভাবে সংযুক্ত করবো।
লিখিত বক্তব্যে তপন কান্তি সরকার বলেন, সরকার বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, যেখানে জনশক্তিই হবে স্মার্ট। সবাইঅনলাইনে সব করতে শিখবে। অর্থনীতি হবে ই-অর্থনীতি, যেখানে সম্পূর্ণ অর্থ ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল ডিভাইসেকরা হবে। আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান’ সবই হবে ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে। ই-শিক্ষা এবং ই-স্বাস্থ্যসহ সবটাতেডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে এটি করতে সক্ষম হব এবং তা মাথায় রেখে কাজ চলছে। তরুণ সমাজ যত বেশি এইডিজিটাল ডিভাইসগুলো ব্যবহার করতে শিখবে, তত দ্রুত তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের বিভিন্ন বিষয়ে তরুণদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত ল্যাবস্থাপন করা হবে। ঘটছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে, আমরা দেখতেপাচ্ছি ৩ডি প্রিন্টার থেকে মুদ্রিত হচ্ছে অনেক কিছু এবং সামনে আনা হচ্ছে। যদিও সিস্টেমের এই বিষয়টি মৌলিকপরিবর্তনের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে। এর আগে স্বাগত বক্তব্যে মোঃ আরফে এলাহী মানিক বলেন, আমরা ডিজিটাল সৈনিক, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য কাজ করেছি। আমরা এখন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করছি। আমরা ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক পরিষেবা নিয়ে আইসিটি বিভাগ, বেসিস, এটুআই, হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, এমওপিটি, বিটিআরসি এবং অন্যান্য অনেক সরকারি ও বেসরকারি সেক্টরের সাথে কাজ করছি।
ফোরামের সহ-সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. সেলিম বলেন, যে কোনো পরিকল্পনা, মহাপরিকল্পনা বা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরবির্তনের শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে ওঠে তখনই, যখন তাতে সন্নিবেশিত হয় লক্ষ্যনির্ভর সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়নযোগ্য কর্মসূচি। আমাদের সামনে এর উজ্জ্বলতম উদাহরণ ডিজিটাল বাংলাদেশ। রূপকল্প ২০২১ এর মূল উপজীব্য ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য অর্জনে প্রণয়নকরা হয়েছিল প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০১০-২১। এ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার আলোকে বিভিন্নকর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় ডিজিটালবাংলাদেশ বিনির্মানে অভাবনীয় সফলতা আসেএমনকি ব্রিটিশ আমল থেকে প্রচলিত সরকারি সেবার পদ্ধতিও ক্রমে পরিবর্তন হচ্ছে সরকারি ক্রয়সহ অনেক সেবাই এখন অনলাইনেও সহজলভ্য। যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক, প্রফেসর ড. দীপ নন্দী বলেন, সিটিও ফোরাম জাতীয় চাহিদা মোকাবেলায় উদ্ভাবনী সমাধানের জন্য অনেক হ্যাকাথন পরিচালনা করেছে। এই ফোরাম এই বিষয়ে অনেক কিছু করতে পারে. এর কারণ, এই ফোরামটি বিশ্ববিদ্যালয় গুলির সাথেও তার পেশাদার নেটওয়ার্ক হিসাবে রয়েছে। CTO ফোরাম বিশ্বব্যাপী অনেক ICT community সাথে সংযুক্ত, তাই আমরা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি স্থানীয়করণে আমাদের দেশকে সাহায্য করতে পারি । চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বিভিন্ন বিষয়ে তরুণদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন করা হবে।
যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো আসিফ বলেন, সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ বাংলাদেশের আইসিটি লিডারদের একটি অলাভজনক এবং অরাজনৈতিক পেশাদার ফোরাম। এই ফোরাম জাতীয় পর্যায়ে আইসিটি সেক্টরে সরকার ও জনগনকে নেতাদের সাহায্য করার জন্য একটি সহযোগী শক্তি হিসাবে কাজ করছে। এর লক্ষ্য সরকারি ও বেসরকারি খাতকে নলেজ ব্যাংকের মাধ্যমে সহায়তা করা যা ফোরামের ৪০০ জন সদস্য দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। ফোরামের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ মুসা, বলেন বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে মাথাপিছু আয় প্রায় ৩০০০ ডলার। মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতু উদ্বোধন দুটিই উন্নয়নের মাইলফলক। সফলভাবে কারোনা মহামারি মোকাবিলা, শিক্ষা, যোগাযোগ অবকাঠামো, গ্যাস, বিদ্যুৎ, নারী শিক্ষা, চাকরিজীবীদের বেতনভাতা শতভাগ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, সামাজিক কর্মসূচির আওতায় পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী, অসহায়, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তালাকপ্রাপ্ত নারীদের সহায়তা, অটিজম, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা প্রদান, আশ্রয়ণ প্রকল্প, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, নারীর ক্ষমতায়নসহ ও বিভিন্ন সেক্টরের সামগ্রিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। ফোরামের কার্য্যকারী সদস্য জনাবা সুপর্ণা রায় বলেন, সরকার বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, যেখানে জনশক্তিই হবে স্মার্ট। সবাই অনলাইনে সব করতে শিখবে। অর্থনীতি হবে ই-অর্থনীতি, যেখানে সম্পূর্ণ অর্থ ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল ডিভাইসে করা হবে। আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান’ সবই হবে ই-গভর্নেন্সের মাধ্যমে। ই-শিক্ষা এবং ই-স্বাস্থ্যসহ সবটাতে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। ফোরামের কার্য্যকারী সদস্য মোঃ ফজলে মুনিম বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও আইসিটি খাতে বিপ্লব সাধন, করোনা মহামারি মোকাবিলায় অসামান্য সাফল্যে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে ও বিশ্বে পঞ্চম স্থানে আসীন করা, দেশকে উন্নয়নশীল বিশ্বের কাতারে শামিল করাসহ বাংলাদেশের অসংখ্য কালোত্তীর্ণ অর্জনের কারিগর সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। যদিও করোনা-উত্তর বৈশ্যিক সমস্যা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট চাপে সারাবিশ্বে বর্তমানে আক্রান্ত। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়।