প্রকৃতি ও পরিবেশের সাথে আমাদের সম্পর্ক নিবিড়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছ লাগানোর বিকল্প নেই। সারাদেশে চলমান তীব্র দাবদাহ আমাদের বার বার স্মরণ করিয়ে দেয় এই নগর, এই সভ্যতা বাঁচিয়ে রাখার এক মাত্র টেকসই সমাধান ‘সবুজায়ন’। আবার পরিবেশ দূষণের জন্য এককভাবে অনেক বেশি দায়ী প্লাস্টিকের অতিব্যবহার ও পুনঃচক্রায়নের অভাব, যা মানুষ ও অন্য প্রাণীর স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করছে। তাই সবুজায়নকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি প্লাস্টিক দূষণ এড়াতে জন সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে দেশব্যাপী ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩’ উদযাপন করে পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র। “গাছ লাগিয়ে যত্ন করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি” এই স্লোগানকে মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে রেখে সংস্থার ৩৩১টি ব্রাঞ্চের নিকটস্থ সরকারি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দুই হাজারের অধিক
সংখ্যক ফলজ, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষের চারা রোপণ করা হয়। এছাড়াও পদক্ষেপ ইন্সটিটিউট অব ডেভলপম্যান্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট (পিআইডিএম)-এ পরিবেশ বিষয়ক একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী পর্ষদের সম্মানিত সদস্য জনাব নাহিদ আক্তার, নির্বাহী পরিচালক জনাব মোঃ সালেহ বিন সামস এবং মাইক্রোফাইন্যান্স, প্রোগ্রাম ও এন্টারপ্রাইজ উইং এর পরিচালক মুহম্মদ রিসালাত সিদ্দীক।
আলোচনা সভার শুরুতে পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র দ্বারা পরিচালিত ‘সাস্টেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্ট’ এর আওতাধীন পরিবেশবান্ধব উপায়ে মাইক্রোপ্লাস্টিক মুক্ত লবণ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। প্লাস্টিক ও পলিথিনের যত্রতত্র ব্যবহাররোধ করে প্লাস্টিক বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও পুনঃচক্রায়ন নিশ্চিত করার জন্য ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক স্তরে সকল মানুষের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। এই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র। সভায় কার্যক্রমগুলো নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। এছাড়াও নগরায়ণের এই যুগে টেকসই সবুজায়নে ছাদকৃষির গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করা হয়। শহরাঞ্চলে এখন বাগান বা কৃষির জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যায় না। অতএব ছাদই কৃষির জন্য একটি বড় ক্ষেত্র হতে পারে।
ছাদকৃষিকে আরো উৎসাহিত করতে পিআইডিএম-এর ছাদে ফলজ এবং ঔষধি বৃক্ষের চারা রোপণ করা হয়। পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের পক্ষ থেকে প্রধান কার্যালয়ের প্রত্যেক কর্মীকে নিজস্ব ডেস্কে রাখার জন্য একটি করে ইন্ডোর প্ল্যান্ট উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়। পরিবেশ এমন একটি বিষয় যেখানে দেশের প্রতিটি নাগরিকের ইতিবাচকভাবে অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সবার অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রয়াসই পরিবেশ রক্ষার মূল চালিকাশক্তি। সময় হয়েছে আজ প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার, টেকসই সবুজায়নের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসার।