ঢাকার মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে আজ সোমবার “Creating a Net Zero Smart Bangladesh” শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রবি আজিয়াটা লিমিটেড এবং সিএসআর উইন্ডো যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের মাধ্যমে নেট জিরো বাংলাদেশ গঠনে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ইনস্টিটিউট অফ এনার্জি ইকোনমিক্স অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ) এর জ্বালানি ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, শফিকুল আলম অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। শফিকুল আলম নেট জিরো বাস্তবায়নে বিশ্ব ও দেশের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে বাস্তব পদক্ষেপসমূহ তা তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, নেট জিরো হচ্ছে রবির মূল বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান আজিয়াটা গ্রুপ বারহাদ কর্তৃক ঘোষিত একটি কার্বন হ্রাস নিঃসরণ কর্মসূচি।
রবির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কমিউনিকেশনস, অনামিকা ভক্ত স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে গোলটেবিল বৈঠকের সূচনা করেন। সিএসআর ও সাসটেইনেবিলিটি বিশেষজ্ঞ মহিউদ্দিন বাবরের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান জনাব শ্যাম সুন্দর সিকদার, সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (স্রেডা) সম্মানিত চেয়ারম্যান, মুনিরা সুলতানা এনডিসিসহ টেকসই উন্নয়ন খাতে কর্মরত কর্পোরেট; ডেভেলপমেন্ট সেক্টরের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। গোলটেবিল বৈঠকে আমন্ত্রিত অতিথিরা রবির ২০২২ সালের সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্ট উন্মোচন করেন। রবির ভাইস প্রেসিডেন্ট, পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি শরীফ শাহ্ জামাল রাজ এ সময় জানান, রবি বর্তমানে ২০৫০ সালের মধ্যে একটি নেট জিরো ভিশন নিয়ে কাজ করছে। সেই সাথে ২০৩০ সালের মধ্যে রবি তার কার্বন নির্গমন ২৫% কমিয়ে দেবে। নেট জিরো ভিশনের দিকে অগ্রগতি তুলে ধরে রাজ বলেন: “এখন পর্যন্ত রবি তার নেটওয়ার্ক সাইটগুলির প্রায় ১৩% সৌর শক্তি দিয়ে চালিত করছে। মোট ২১২৭টি সৌর শক্তি চালিত নেটওয়ার্ক সাইট সহ, ২০২০ এবং ২০২২ এর মধ্যে মোট ইনস্টল করা ক্ষমতা প্রায় ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে সৌর শক্তি-ভিত্তিক শক্তি উৎপাদন প্রায় ২৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। সৌর বিদ্যুতের উপর নির্ভর করার পাশাপাশি, রবি তার কার্বন নিঃসরণ বন্ধ করতে বৃক্ষরোপণও চালিয়ে যাচ্ছে।” বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন: “আমাদের জাতিসংঘের নির্ধারিত ২০৫০ সালের জন্য অপেক্ষা করা উচিত নয়, বরং আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত ২০৪১ সালের মধ্যে নেট জিরো লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা, আমি রবিকে এ ধরনের ঘোষণার জন্য প্রশংসা করি। রবির
২,০০০-এর বেশি নেটওয়ার্ক টাওয়ারে সৌর শক্তি ব্যবহার করে এটি জেনে এবং এই বিষয়ে তাদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখে আমি খুবই উৎসাহিত হয়েছি। নেট জিরোভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সরকারি ও বেসরকারি খাতের সহযোগিতা প্রয়োজন।” সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (স্রেডা) চেয়ারম্যান, মুনিরা সুলতানা বলেন: “আমি রবিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এই সময় উপযোগী গোলটেবিল আয়োজনের জন্য। আমাদের ধাপে ধাপে নেট জিরো ভিশনের কাছে যেতে হবে। আপনি জেনে খুশি হবেন যে আমরা সহজ পদ্ধতি গ্রহণের মাধ্যমে স্রেডাতে বিদ্যুতের ব্যবহার ৪০% এর বেশি কমিয়েছি। এমনকি একজন সাধারণ ব্যক্তিও নেট মিটারিং নীতি ব্যবহার করে বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে। নেট জিরো ভিশনের দিকে যাত্রার পথ বিস্তৃত করার জন্য আমাদের এই নীতিকে জনপ্রিয় করতে হবে।” অনুষ্ঠানে উপ-পরিচালক (জলবায়ু পরিবর্তন ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন) পরিবেশ অধিদপ্তর, মাহমুদ হোসেন, পরিবেশবিদ এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, গ্রীন সেভারস, আহসান রনি, চেয়ারম্যান, ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ, মোঃ শামীম জাহাঙ্গীর, সভাপতি, টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) রাশেদ মেহেদী, মনিরুজ্জামান খান, প্রোগ্রাম প্রধান, জলবায়ু পরিবর্তন, ব্র্যাক, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ প্ল্যানার্স (বিআইপি), শেখ মুহাম্মদ মেহেদী আহসান, এবং কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড, ডেপুটি ডিরেক্টর, জাকির হোসেন আলোচনায় অংশ নেন।