বর্তমানে স্মার্টফোনে আয়ের নতুন উৎস খুঁজে পেতে আশাবাদী দেশের শতকরা ৫৭ ভাগ মানুষ; যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয়। এছাড়াও শতকরা ৯৭ ভাগ মানুষ স্মার্টফোনে তাদের তথ্য সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত থাকেন। সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ওপর একটি গবেষণা পরিচালনা করে এশিয়ার অন্যতম শীর্ষ টেলকো-টেক প্রতিষ্ঠান এবং গ্রামীণফোনের প্রধান বিনিয়োগকারী টেলিনর এশিয়া। এ গবেষণায় এসব তথ্য ওঠে আসে। “বিল্ডিং বেটার ডিজিটাল লাইভস ফর এ স্মার্ট বাংলাদেশ” শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানটিতে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা, শিল্পনেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন খাতের অংশীজনেরা উপস্থিত ছিলেন। এই আয়োজনে সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আইসিটি বিভাগের মাননীয় সচিব জনাব মোঃ সামসুল আরেফিন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের সংযোগের জন্য ডিজিটাল অবকাঠামো মৌলিক। সুতরাং, আমাদের সম্মিলিত অগ্রাধিকার হওয়া উচিৎ স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১-এর রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য ব্রডব্যান্ডের বিপুল শক্তি ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো। সেই সাথে, আরো বেশি সংখ্যক মানুষ যেন তথ্যপ্রযুক্তি সুবিধার আওতায় আসতে পারেন এবং এর মাধ্যমে দক্ষতার বিকাশ ঘটিয়ে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটাতে পারেন, সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে।” প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর টেলিনর এশিয়া’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং হেড অব এক্সটারনাল রিলেশনস মনীষা ডোগরা’র সঞ্চলনায় প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সম্মানিত উপস্থিতিদের সামনে টেলিনর এশিয়া’র “ডিজিটাল লাইভস ডিকোডেড” শীর্ষক রিপোর্টটি তুলে ধরা হয়। রিপোর্টটিতে সামাজিক রূপান্তর, কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নতুন সম্ভাবনার বিকাশে মোবাইল সংযোগের কার্যকারীতা প্রসঙ্গে এশিয়ার ৮ টি দেশের ৮ হাজারেরও বেশি ব্যক্তির উপর পরিচালিত জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণাদি উপস্থাপিত হয়েছে।
এ সময় গ্রামীণফোনের চিফ বিজনেস অফিসার ড. আসিফ নাইমুর রশিদসহ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও আইসিটি বিভাগের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিবৃন্দ, এবং অন্যান্য শিল্পনেতারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি বিটিআরসি’র ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ এহসানুল কবির। টেলিনর এশিয়া ডিজিটাল লাইভস ডিকোডেড রিপোর্টের তিনটি অধ্যায়ে এশিয়ার ৮টি দেশ (বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইনস, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম) থেকে ৮ হাজারেরও বেশি ব্যক্তির তথ্য যাচাই করা হয়েছে। এই প্রকাশনাটির লক্ষ্য মূলত মোবাইল কানেক্টিভিটির প্রসঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের মনোভাব ও আচরণ বিশ্লেষণ করা, এবং কীভাবে এটি এশিয়া অঞ্চলে জনগণের জীবনযাত্রা, পেশা ও বিনোদনকে প্রভাবিত করছে, তা অনুসন্ধান করা। অংশগ্রহণকারীদের লিঙ্গ এবং বয়সের ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। এক্ষেত্রে ১৮ বছর ও তদুর্দ্ধ ব্যক্তিদের আলাদা করার পাশাপাশি জেন জি (জন্মসাল ১৯৯৭-২০১২), মিলেনিয়াল (জন্মসাল ১৯৮১-১৯৯৬); জেন এক্স (জন্মসাল ১৯৬৫- ১৯৮০) এবং বেবি বুমারস (জন্মসাল ১৯৪৬-১৯৬৪) – এই চারটি ভিন্ন প্রজন্মের সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারীদের আলাদা করা হয়।