আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ সর্বজনীন চক্ষুসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ খাতের এনজিওগুলোকেএকটি সমন্বিত পদক্ষেপ এবং সহযোগিতামূলক পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে এ খাতের অংশীজনরা। ৮ জুলাই) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকালে তারা জাতীয় পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত চক্ষুসেবাদানকারী সকল সংস্থাকে এক ছাতার নিচে আসার আহ্বান জানান যাতে করে সর্বজনীন চক্ষুসেবা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা জোরদার করা যায়। তারা মতামত দেন, এই ধরনের পদক্ষেপ, পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টা না নিলে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সর্বজনীন চক্ষুসেবা নিশ্চিত করা কঠিন হবে। কারণ ওয়ার্ল্ড হেল্থ অ্যাসেম্বলি নির্ধারিত সময়সীমার আর মাত্র সাড়ে পাঁচবছর বাকী আছে। চক্ষু স্বাস্থ্য বিষয়ক আইএনজিও ফোরাম "চক্ষু স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট অংশীজনদের কর্মশালা – সর্বজনীন চক্ষু
চিকিৎসাসেবা-২০৩০-এর পথে শীর্ষক এ কর্মশালা আয়োজন করে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর কনফারেন্স রুমে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মো. সাইদুর রহমান চক্ষু স্বাস্থ্য খাতের জন্য তার বিভাগ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কর্মরত স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো চক্ষুসেবায় অনেক অবদান রাখছে, কিন্তু তাদের নিজেদের মধ্যে এবং সরকারের ন্যাশনাল আই কেয়ার (এনইসি) এবং এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর সঙ্গে তাদের
সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এমন সমন্বয় ও সহযোগিতার অভাবে এনইসি এবং এনজিও বিষয়ক ব্যুরো চক্ষুসেবা বিষয়ক প্রয়োজনীয় উপাত্ত পায় না বলে জানান তিনি।
সাইদুর রহমান স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক সকল এনজিওকে একটি অভিন্ন প্লাটফর্মের আওতায় আসার আহ্বানজানান, যাতে তারা হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে পারে এবং চক্ষুসেবায় আরও বেশি অবদান রাখতে পারে।অন্ধত্ব প্রতিরোধ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার (আইএপিবি) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের চেয়ার অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. পীরজাদা সেব্রিনা ফ্লোরা, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক-কাম-প্রফেসর এবং ন্যাশনাল আই কেয়ারের (এনইসি) লাইন
ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা এবং চক্ষু স্বাস্থ্য বিষয়ক আইএনজিও ফোরামের চেয়ার এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনির আহমেদ কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। ডা. এনায়েত বলেন, চক্ষু স্বাস্থ্য নিয়ে জন্য কাজ করে এমন এনজিওগুলোর কর্মসূচি লক্ষ্যভিত্তিক হতে হবে,যাতে আরও ভালো ফলাফল অর্জন করা যায়। তিনি বলেন, ”যদি আমরা সবাই বিক্ষিপ্তভাবে কাজ করি, তাহলে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা, বিশেষ করে চক্ষু স্বাস্থ্যক্ষেত্রে লক্ষ্য অর্জন করতে পারব না।” তিনি চোখের যত্নে অন্তর্ভুক্তি ও সমতার গুরুত্বের উপর জোর দেন। ডা. গোলাম মোস্তফা সারাদেশে কর্মরত চক্ষুসেবা খাতের জনবলকে একটি নির্দিষ্ট মানে আনার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, “তারা (চক্ষুসেবা খাতের জনবল) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করে আসছেন এবং তাদের গুণমানে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। তাদের যাতে একটি ন্যূনতম মান অর্জন করে তা নিশ্চিত করার জন্য
একটি ব্যবস্থা থাকা উচিত।
গোলাম মোস্তফা চক্ষুসেবা প্রদানকারী সকল সংস্থাকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ক্যাটারাক্ট সার্জিক্যাল প্রোটোকল মেনে চলার জন্য এবং ভিশন সেন্টারগুলোকে মানসম্মত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডা. মুনির এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর প্রশংসা করে বলেন, এ সহযোগিতা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সকল অংশীজনকে একত্রিত করতে সাহায্য করবে। ভবিষ্যতেও এই প্রচেষ্টাঅব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।অরবিস ইন্টারন্যাশনাল, সাইটসেভার্স, সিবিএম গ্লোবাল, হেলেন কেলার ফাউন্ডেশন, দ্যা ফ্রেড হলোজ ফাউন্ডেশন, ভিশনস্প্রিং, গুড পিপল, হার্ট টু হার্ট ফাউন্ডেশন, এসিলর লুক্সোটিকা, আল বাশার ফাউন্ডেশন, ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল, ব্র্যাক, কক্সবাজার বায়তুশ শরফ হাসপাতাল, মাজহারুল হক বিএনএসবি হাসপাতাল চাঁদপুর, ডা. কে জামান বিএনএসবি হাসপাতাল ময়মনসিংহ এবং দীপ আই কেয়ার রংপুরের প্রতিনিধিরাকর্মশালায় অংশ নেন।