হোম প্রযুক্তি খবরইন্টারনেট টিয়ার-৪ ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম চালু করলো এক্সেনটেক

টিয়ার-৪ ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম চালু করলো এক্সেনটেক

দেশে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ স্থানীয়ভাবে হোস্টকৃত টিয়ার-৪ ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম চালু করলো এক্সেনটেক পিএলসি। ‘এক্সেনটেক ক্লাউড’ নামে প্ল্যাটফর্মটি চালু করেছে রবি আজিয়াটা পিএলসির এই সহযোগী প্রতিষ্ঠান। আজ  ঢাকায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস মিটে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও প্রযুক্তি সম্পাদকদের উপস্থিতিতে ক্লাউডটির অবকাঠামো, সক্ষমতা ও জাতীয় গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এক্সেনটেক ক্লাউড বাংলাদেশের প্রথম স্থানীয়ভাবে হোস্টকৃত এন্টারপ্রাইজ ক্লাউড, যা বৈশ্বিক মানের নির্ভরযোগ্যতা, নিরাপত্তা ও সম্প্রসারণের মানদণ্ড পূরণ করে। এটি সম্পূর্ণ দেশীয়ভাবে পরিচালিত। যশোরে এর টিয়ার-৪ মানের ডাটা সেন্টার আছে এবং ভুলতায় অতিরিক্ত হোস্টিং সুবিধাও রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে পরিচালিত হওয়ায় এতে তথ্যের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য একটি বড় অগ্রগতি এবং স্থানীয় প্রযুক্তি সক্ষমতার মাইলফলক।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “শুধু ডাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা উন্মোচনের জন্যও আমাদের উচিত স্থানীয় ক্লাউড অবকাঠামোকে অগ্রাধিকার দেয়া। এক্সেনটেক ক্লাউড সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ, যা একদিকে বৈশ্বিক ব্যবসাকে আকৃষ্ট করবে এবং অন্যদিকে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের উৎকর্ষ বাড়াবে। এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কমপ্লায়েন্স বা নিরাপত্তার সাথে আপস না করেই উদ্ভাবনের সুযোগ করে দেবে। এটি আমাদের স্থানীয় প্রযুক্তি ইকোসিস্টেমে জন্য একটি নতুন মাইলফলক।”

এক্সেনটেক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আদিল হোসাইন নোবেল বলেন, বহু বছর ধরে বাংলাদেশের এন্টারপ্রাইজগুলোকে বিদেশে হোস্টকৃত ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। এর ফলে ডাটার সার্বভৌমত্ব, গতি, নিয়ম কানুন এবং খরচ নিয়ে নানা উদ্বেগ তৈরি হতো। এই চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানের লক্ষ্যেই এসেছে এক্সেনটেক ক্লাউড। এটি স্থানীয় ও শক্তিশালী এবং আগামী দশকে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে সহায়তা করতে তৈরি হয়েছে।”

এক্সেনটেক ক্লাউডের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো:
 টিয়ার-৪ অবকাঠামো: সর্বোচ্চ স্তরের ত্রুটি সহনক্ষমতা ও আপটাইম নিশ্চিত করে, সম্পূর্ণ দেশীয়ভাবে হোস্টকৃত।
 জাতীয় নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ: বাংলাদেশ সরকারের তথ্য সুরক্ষা ও শাসন কাঠামোর সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সংগতিপূর্ণ।

 স্থানীয় বিলিং, বৈদেশিক মুদ্রা ঝামেলা নয়: স্বচ্ছ টাকাভিত্তিক প্রাইসিং, প্রিপেইড ও এন্টারপ্রাইজ উভয় বিলিং মডেল সমর্থন করে।
 সম্পূর্ণ দেশীয় সাপোর্ট: ২৪/৭ নিবেদিত এন্টারপ্রাইজ সাপোর্ট টিম সার্বক্ষণিক মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করে।
 ইলাস্টিক পারফরমেন্স: অটো-স্কেলিং এবং ইলাস্টিক লোড ব্যালান্সিংয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ চাহিদার সময়েও নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিষেবা প্রদান নিশ্চিত করা হয়।
 এন্টারপ্রাইজ-গ্রেড সিকিউরিটি স্ট্যাক: বিল্ট-ইন অ্যান্টি-ডিডস, WAF, ক্লাউড ফায়ারওয়াল ও এনক্রিপটেড ব্যাকআপস — শক্তিশালী নিরাপত্তার জন্য।
 এআই ও ডেভেলপার-প্রস্তুত প্ল্যাটফর্ম: GPU ওয়ার্কলোড, ক্লাউড কনটেইনারএবং রিলেশনাল ডাটাবেস সার্ভিস (RDS) সমর্থন করে এআই, এমএল ও IoT অ্যাপ্লিকেশন চালাতে প্রস্তুত।
হাইব্রিড ক্লাউড ইন্টিগ্রেশন: On-Prem ও ক্লাউডের মধ্যে নির্বিচারে সংযোগ — ডাইরেক্ট কানেক্ট ও প্রাইভেট DNS-এর মাধ্যমে।

উল্লেখ্য, টিয়ার-৪ ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম হলো একটি অত্যন্ত উন্নত ও নির্ভরযোগ্য ডাটা সেন্টার অবকাঠামো, যা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অত্যাধুনিক পদ্ধতির ডাটা সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা,বিশ্লেষণ এবং দ্রুত অ্যাক্সেস নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত হয়। ‘এক্সেনটেক ক্লাউড’ ব্যাংকিং, স্বাস্থ্যসেবা, লজিস্টিকস, ই-কমার্স ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী।

কোনো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের জটিলতা ছাড়াই বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের ডাটার উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে, আইটি অপারেশনকে অপ্টিমাইজ করতে এবং কমপ্লায়েন্স প্রস্তুতি উন্নত করতে সহায়তা করবে এটি।

Related Articles

কমেন্ট করুন :-