স্পেনের বার্সেলোনায় চলতি বছরের আয়োজিত মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে (এমডব্লিউসি) ‘অপো এয়ার গ্লাস ৩’ উন্মোচন করেছে শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক প্রযুক্তি কোম্পানি অপো। এটি অ্যাসিস্টেড রিয়েলিটি চশমার নতুন প্রজন্মের একটি প্রোটোটাইপ। স্মার্টফোনের মাধ্যমে অপো’র অ্যান্ডেসজিপিটি মডেলে প্রবেশ করতে পারবে অপো এয়ার গ্লাস ৩, যা ইউজারকে দেবে একটি নতুন নির্বিঘ্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অভিজ্ঞতা। অনুষ্ঠান আয়োজনের আগেই, ‘অপো এআই সেন্টার’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে ‘অপো এআই স্মার্টফোন হোয়াইট পেপার’ প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি, যা স্মার্টফোনকে একটি এআই স্মার্টফোনে রূপান্তরের ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা করে। চলতি বছরের এমডব্লিউসি-২০২৪ এ, কোয়ালকম টেকনোলজিস ইনকর্পোরেটেড এবং স্টার্টআপ আলপসেনটেকের সঙ্গে যৌথভাবে অপো একটি নতুন এআই মোশন অ্যালগরিদম চালু করেছে। হাইব্রিড ভিশন সেন্সিং (এইচভিএস) প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে এটি চালু করা হয়েছে, যা উচ্চ-গতির চলমান বস্তুর ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফিতে এনেছে বাড়তি স্বচ্ছতা। এছাড়াও, গুগল, কোয়ালকম টেকনোলজিস ও মিডিয়াটেকের মতো অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে অপো বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন করছে এবং ঘোষণা করেছে যে, অপো স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা শীঘ্রই তাদের ফোনগুলোকে মাইক্রোসফট কোপাইলটের সঙ্গে সংযুক্ত করতে সক্ষম হবেন। অংশীদারদের সহযোগিতায় এই ইন্ডাস্ট্রিতে উন্নত প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে এটি অপো’র প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন।
সবচেয়ে হালকা বাইনোকুলার এআর চশমা : টেক্সট, ইমেজ, ভিডিও ও অডিও সহ বিভিন্ন ডেটা বুঝতে দক্ষ এই চশমা। এর মাল্টিমোডাল এআই প্রযুক্তি ভয়েস ও ভিজ্যুয়ালের মতো আরও জটিল ইউজার সিনারিওর বিভিন্ন প্রক্রিয়া করে তা ব্যাখ্যা করতে সক্ষম, যা যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর জন্য খুলে দেয় নতুন সম্ভাবনার দ্বার। এই ফিচারগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে এক্সআর (এক্সটেন্ডেড রিয়েলিটি) ডিভাইসগুলো। তবে সত্যিকার অর্থে একটি ব্যক্তিগত, দৈনন্দিন স্মার্ট সহকারীর ভূমিকা নিতে হলে এর প্রয়োজন উন্নত কার্যকারিতা এবং লাইটওয়েট ডিজাইন। এই লক্ষ্যে অনুপ্রাণিত হয়ে একেবারে নতুন অপো এয়ার গ্লাস ৩ প্রোটোটাইপ চালু করেছে অপো। এক্সআর ডিভাইস ও স্মার্টফোনের মধ্যে ক্রস-ডিভাইস সমন্বয়ের ওপর ভিত্তি করে এআই প্রযুক্তির সম্ভাবনা খুঁজতে নতুন এই প্রোটোটাইপ চালু করা হয়েছে।
এআইয়ের উপর গুরুত্বারোপ : এআই দীর্ঘ সময় ধরে অপোর বিনিয়োগ এবং উন্নয়নের একটি মূল ক্ষেত্র। প্রতিষ্ঠানটি এখন এআইকে দীর্ঘমেয়াদী সমৃদ্ধির কৌশলের মূলে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। ২০ ফেব্রুয়ারি অপো এআই সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে অপো’র সক্ষমতাকে এআইয়ের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে আরও ভালোভাবে কাজে লাগানো হবে। এছাড়া এখানে সকলের কাছে এআইয়ের সুবিধা নিয়ে আসার লক্ষ্যে অত্যাধুনিক এবং ব্যবহারকারী-কেন্দ্রিক প্রযুক্তি ও অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে গবেষণা করা হবে। এই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে ২০২৪ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে অপো রেনো১১ সিরিজ এবং অপো ফাইন্ড এন৩ তে অপো এআই ইরেজারসহ বিভিন্ন জেনারেটিভ এআই ফিচার যোগ করা হবে। ভবিষ্যতে অপো জেনারেটিভ এআই ফিচারগুলিকে আন্তর্জাতিক বাজারে রেনো সিরিজের নেক্সট জেনারেশনসহ অন্যান্য পণ্যেও যুক্ত করবে। এর ফলে আরও বেশি ব্যবহারকারী এআইয়ের মাধ্যমে স্মার্ট, কার্যকর এবং সুবিধাজনক জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতা পাবে।
সহযোগিতামূলক উদ্ভাবনের মাধ্যমে একটি এআই ইকোসিস্টেম গঠন : একটি সম্পূর্ণ এআই ইকোসিস্টেমের জন্য এই ইন্ডাস্ট্রি জুড়ে উন্মুক্ত সহযোগিতা
প্রয়োজন। এই ইকোসিস্টেম তৈরিতে সহায়তা করার অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে অপো এর নিজের উদ্ভাবনের পাশাপাশি বিভিন্ন বৈশ্বিক অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে এআইয়ের ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করবে। অপোর শীর্ষ প্রযুক্তি ও পণ্য এআই সক্ষমতার জন্য স্বীকৃতি অর্জন করেছে অপো ওডিসি ২০২৩-এ প্রতিষ্ঠানটি এর প্রথম সেলফ-ট্রেইনড জেনারেটিভ এআই মডেল অ্যান্ডেসজিপিটি উন্মুক্ত করেছে। এতে রয়েছে ডায়লগ এনহ্যান্সমেন্ট, পারসোনালাইজেশন ও ক্লাউড-ডিভাইস কোলাবরেশন। অ্যান্ডেসজিপিটির সক্ষমতার উপর ভিত্তি করে অপো নতুন অপো ফাইন্ড এক্স৭ সিরিজে একটি নতুন এআই ইরেজার ফিচার চালু করেছে। স্টার্টআপ কমিউনিটি এখন এআই ও অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই প্রেক্ষাপটে অপো এমডব্লিউসি ফোরওয়াইএফএনের অপো ইন্সপিরেশন জোনে ছয়টি স্টার্টআপকে উপস্থাপন করছে। স্টার্টআপগুলির প্রযুক্তিগুলির মধ্যে রয়েছে কনট্যাক্টলেস হেলথ মনিটরিং প্রযুক্তি, হৃদযন্ত্র এবং ফুসফুসের শব্দ ধারনের জন্য ইন্টেলিজেন্ট ডায়গনস্টিক সিস্টেম, এআর গেম এবং অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন, যেগুলি এআই প্রযুক্তির বিশাল সম্ভাবনাকে প্রদর্শন করছে।
“মানবতার জন্য প্রযুক্তি, বিশ্বের জন্য সহানুভূতি” এই লক্ষ্যের আওতায় অপো এআইয়ের বিকাশ ও প্রয়োগে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। বিশ্বের নানা অংশীদারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি শিল্পখাতে আরও উন্নত পণ্য ও পরিষেবা চালু করবে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য উন্নত অভিজ্ঞতা নিয়ে আসার পাশাপাশি আরও উন্মুক্ত ও উন্নত বৈশ্বিক প্রযুক্তি ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।